ডেস্কটপ পিসি বলতে চোখের সামনে একটি বিশাল বাক্স, মনিটর, কিবোর্ড, মাউস ভেসে ওঠে। সে ধারণা প্রযুক্তির চমক লাগানো উন্নতিতে পাল্টাতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে অ্যাপলের ম্যাক মিনি কম্পিউটারের ছোট আকার সবার মন জয় করে নিয়েছে। এ কারণে অন্য কোম্পানিগুলোও ছোট সাইজের পিসি তৈরি শুরু করেন।
এগুলোর মধ্যে ইন্টেল নুক জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে। যাদের ছোট আকারের ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী একটি পিসি দরকার তাদের জন্য এ রিভিউ।
একনজরে ইন্টেল নুক (৬ষ্ঠ প্রজন্ম)
- ৬ষ্ঠ প্রজন্মের ইন্টেল কোর আই থ্রি ৬১০০ইউ প্রসেসর, ২.৩ গিগাহার্জ ডুয়াল কোর
- ডুয়াল চ্যানেল ডিডিআর৪ র্যাম সাপোর্ট (ডিভাইসের সঙ্গে দেওয়া নেই র্যাম)
- ইন্টেল এইচডি ৫২০ গ্রাফিক্স
- এম.২ এসএসডি স্টোরেজ সাপোর্ট বা সাটা৩ ২.৫ ইঞ্চি ড্রাইভ সাপোর্ট করে ( এটিও সাথে দেয়া নেই)
- পেছনে ও সামনে দুটি করে ইউএসবি ৩ পোর্ট
- সামনে ইনফ্রারেড সেন্সর
- এসডি কার্ড স্লট
- হেডফোন ও মাইক্রোফোন জ্যাক
- গিগাবিট ইথারনেট, ৮০২.১১এসি .ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ৪.১
ডিজাইন
ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটারটি দৈঘ্যে ও প্রস্থে ১২ সেন্টিমিটারেরও কম। ফলে যে কোনও স্থানে এটি রেখে ব্যবহার করা সম্ভব। মূলত পিসিটি মিডিয়া সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি। তাই সরাসরি টিভির রিমোট ব্যবহারের জন্য ইনফ্রারেড সেন্সরও দেওয়া রয়েছে এতে।
ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটারটি দৈঘ্যে ও প্রস্থে ১২ সেন্টিমিটারেরও কম। ফলে যে কোনও স্থানে এটি রেখে ব্যবহার করা সম্ভব। মূলত পিসিটি মিডিয়া সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি। তাই সরাসরি টিভির রিমোট ব্যবহারের জন্য ইনফ্রারেড সেন্সরও দেওয়া রয়েছে এতে।
পুরো পিসিটি ছোট বাক্সের আকৃতির। সিলভার অ্যালুমিনিয়াম ও কালো প্লাস্টিকে তৈরি বডির বিল্ড কোয়ালিটি খুবই সুন্দর।
ইন্টেল নুকের ওপরের কালো প্লাস্টিকের প্যানেলে রয়েছে পাওয়ার বাটন। সামনে রয়েছে দুটি ইউএসবি পোর্ট, হেডফোন অডিও জ্যাক, ও ইনফ্রারেড সেন্সর।
বাম পাশে রয়েছে কার্ড স্লট ও পেছনে এইচডিএমআই পোর্ট, পাওয়ার পোর্ট, গিগাবিট ইথারনেট পোর্ট, মিনি ডিসপ্লে পোর্ট ও আরও দুটি ইউএসবি পোর্ট।
মেশিনটির ওপরের অংশে কালো প্লাস্টিক হলেও চারিদিকে সিলভার অ্যালুমিনিয়াম মোড়ানো।
পারফরমেন্স
একটি কম্পিউটারের পারফরমেন্স সাধারণত বেঞ্চমার্ক পরীক্ষার মাধ্যমে বিবেচনা করা হয়। তবে বেঞ্চমার্ক দেখে সাধারণত ঠিক পারফরমেন্স বিচার করা যায় না। সে ক্ষেত্রে প্রচলিত এ পরীক্ষা ছাড়া আরও দুটি দিক থেকে নুকের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজ ও বিনোদনের এর ব্যবহার উপযোগিতা যাচাই করা হয়েছে।
একটি কম্পিউটারের পারফরমেন্স সাধারণত বেঞ্চমার্ক পরীক্ষার মাধ্যমে বিবেচনা করা হয়। তবে বেঞ্চমার্ক দেখে সাধারণত ঠিক পারফরমেন্স বিচার করা যায় না। সে ক্ষেত্রে প্রচলিত এ পরীক্ষা ছাড়া আরও দুটি দিক থেকে নুকের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজ ও বিনোদনের এর ব্যবহার উপযোগিতা যাচাই করা হয়েছে।
- কাজ : কোর আই থ্রি প্রসেসর সাধারণত হালকা থেকে মাঝারি কাজের জন্য তৈরি করা হয়। তার মানে এই নয় যে, এটি ভারী কাজ করতে একেবারেই অক্ষম। সেক্ষেত্রে কাজ করতে প্রসেসরটির বেশ অনেকটুকু সময় লাগবে। তবে ওয়েব ব্রাউজিং, হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ফটো এডিটিং, ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশিট ও মাঝারি মানের প্রোগ্রামিং প্রায় সবকিছুই সুন্দরভাবে চালাতে সক্ষম পিসিটি। ঠিকভাবে কাজ করার জন্য অবশ্য সঠিক পরিমান র্যাম লাগিয়ে নিতে হবে। ৮ গিগাবাইট র্যাম সাধারণ সব কাজের জন্য যথেষ্ট। বাজেট কম থাকলে ৪ গিগাবাইট র্যামেও কাজ চালিয়ে দেয়া যেতে পারে।
- বিনোদন : কম্পিউটার মানেই গেইম- এমন একটি ধারণা আমাদের দেশে প্রায় সবার মাঝেই বিদ্যমান। এ বিবেচনায় একেবারেই গেমিং উপযোগী নয় কম্পিউটারটি। এরপরও এর বিল্ট-ইন ইন্টেল এইচডি ৫২০ জিপিউটি একেবারে ফেলনা নয়। এটি এনভিডিয়া জিটি ৮২০ এম জিপিউ এর চাইতে প্রায় ৩% বেশি পারফরমেন্স দিতে সক্ষম। অতএব পুরাতন ও মাঝারি নতুন সব গেইম লো সেটিংস ও ১২৮০x৭২০ পিক্সেল রেজুলেশনে ৩০ এফপিএসে চলবে। অন্যদিকে বিনোদন মানেই গেমিং নয়, মুভি দেখা ও গানশোনও এর মাঝে পরে। সেদিক থেকে পিসিটির পারফরমেন্স যথেষ্ট ভাল। এটি ৪কে ভিডিও সঠিকভাবে চালাতে সক্ষম, ফুল এইচডি ভিডিও দেখা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।
- বেঞ্চমার্ক: দিন শেষে কোনও পারফরম্নেস রিভিউ বেঞ্চমার্ক ছাড়া সঠিকভাবে করা যাবে না। তাই কিছু জনপ্রিয় বেঞ্চমার্ক নিচে দেয়া হলো।
- গিকবেঞ্চ
- থ্রিডি মার্ক
- পিসি মার্ক
ব্যবহারিক সুবিধা
- থার্মাল ডিজাইন : ইন্টেলের নুক কম্পিউটারগুলো প্রায় সবসময়ই প্রসেসরের তাপ সুন্দরভাবে সরানোর জন্য ডিজাইন করা থাকে। এক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম নয়। সর্বোচ্চ লোডেও কম্পিউটারটি বেশ ঠান্ডা ও শব্দহীন ভাবে চলতে সক্ষম। মিডিয়া সেন্টার পিসির জন্য যা খুবই গুরত্বপূর্ণ।
- পোর্ট : পোর্টের দিক থেকে পিসিটিতে কোনও কমতি নেই। তবে কার্ড স্লটটি সাইডে থাকার ফলে ব্যবহারে একটু সমস্যা হতে পারে।
- হার্ডওয়্যার বর্ধনযোগ্যতা : র্যাম ও স্টোরেজ ছাড়া আর কিছুই ব্যবহাকারী বদল করতে পারবেন না। এটি অনেকের জন্য সমস্য হতে পারে।
- বিদ্যুৎ : পিসিটি মাত্র ৬৫ ওয়াট পাওয়ারে চলতে সক্ষম। ফলে দীর্ঘ সময় চালু রাখলেও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ভাবতে হবে না।
সফটওয়্যার সাপোর্ট
মূলত উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি করা হলেও উইন্ডোজ ৭ বা লিনাক্স চালানো যাবে তেমন কোনো সমস্যা ছাড়াই।
মূলত উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি করা হলেও উইন্ডোজ ৭ বা লিনাক্স চালানো যাবে তেমন কোনো সমস্যা ছাড়াই।
অনেকে এটিকে ফাইল, প্রিন্ট ও মিডিয়া সার্ভার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিশেষ মিডিয়া সেন্টার কেন্দ্রিক লিনাক্স ডিস্ট্রো ব্যবহার করতে পারেন।
মূল্য : বাজারে ২৫ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ইন্টেল আই থ্রি নুক। তবে আই৫ বা পেন্টিয়াম সংস্করণ কিনলে মূল্য বাড়বে বা কমবে।
এক নজরে ভাল
- স্বল্প মূল্যে ছোট পিসি
- সব ধরণের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের সুযোগ
- তাপ নিয়ে চিন্তা নেই
- মিডিয়া সেন্টারের ফিচার রয়েছে
এক নজরে খারাপ
- প্রসেসর, মাদারবোর্ড বা কোনও কিছুই বদলযোগ্য নয়
- র্যাম ও স্টোরেজ সঙ্গে দেওয়া নেই
- গেমিং উপযোগী নয়
- নিজেরা একই ধরনের পিসির কনফিগারেশন করলে কিছুটা কম মূল্যে পাওয়া যাবে
Download now